উপজাতি যুবকের বিস্ফোরক মন্তব্যে আতঙ্ক কমলার শহর কাঞ্চনপুরে। প্রতিবাদ অব্যাহত বাঙালীদের।

IIW : নিজস্ব প্রতিনিধি, কাঞ্চনপুর :- বাঙালিরা দোকানপাট বন্ধ করলে আমাদেরই লাভ। তাদের কাছ থেকে জিনিসপত্র ক্রয় না করে সেই সঞ্চিত অর্থ দিয়ে বন্দুক কিনে বাঙালি নিধন করতে পারব। এমনই এক চাঞ্চল্যকর ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে সমস্ত কাঞ্চনপুর মহাকুমার বাঙালীদের মনে ভূকম্পন সৃষ্টি করেছে উপজাতি এক যুবক অবিনাশ। তার এই উত্তেজিত মন্তব্যে সমস্ত মহকুমা জুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রিয়াং উপজাতি ও বাঙালীদের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়তে শুরু করে। ঘনীভূত হয় আশঙ্কার আলো ছায়া।
এদিকে, এমনিতেই সপ্তাহ খানেক ধরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে ও পৃথক রাজ্য ত্রিপ্রাল্যান্ডের দাবিতে গোটা মহকুমা উত্তপ্ত করে তুলে উপজাতি রিয়াং জনগোষ্ঠীরা। তাদের মারমুখী দাপুটে বাঙালিরা অনেক ক্ষয়ক্ষতির মুখ দেখলেও বর্তমানে পিছিয়ে নেই বাঙালিরাও। ''নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের'' ডাকে গত শনিবার থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য মহকুমা বন্ধের ডাক দিয়েছে বাঙ্গালিরা। আজও সমস্ত মহকুমা একেবারে শুনসান। বন্ধ অধিকাংশ দোকানপাট এবং বাজার। আজ কাঞ্চনপুর নতুন আই এস বি টি অফিসে "নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের" আহবানে এক বিরাট সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে অত্যাচারিত সব গ্রামের মানুষদের নিয়ে বিভিন্ন কমিটিও গঠন করা হয়। যাতে করে নিজেদের অসুবিধায় সকল বাঙালিরা একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারে এবং উপজাতিদের আক্রমণ রুখতে পারে। সেখানে আজ সকল বাঙালিরা একত্রিত হয়।
অপরদিকে, এক টানা পাঁচ দিন ধরে দশদা দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে শতশত বাঙালি পরিবার শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। ফলে তাদের বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। মশার উপদ্রবে এখনো পর্যন্ত অনেক শিশু ও বৃদ্ধরা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, খাবার ব্যবস্থা এবং থাকার সুব্যবস্থা ও নেই। চরম সংকটে ঐ অসহায় পরিবারগুলো। নেই কোনো প্রশাসনিক তৎপরতা। দশদা বাজার কমিটির উদ্যোগে তাদের প্রতিদিন খাবারের ব্যবস্থা করা হলেও তা আশানুরূপ নয়। তাদের বাড়িঘরে পড়ে রয়েছে গৃহপালিত পশু ও জমিতে পাকা ধান। এমন অবস্থায় অসহায় পরিবারগুলো দিন কাটাচ্ছে শরণার্থী শিবিরে। চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে মহিলারা। ১৯৮৮ সালের জোট আমলের কালো দিনগুলোর মতো তাদের আবারও শিউরে উঠতে হয়। উবে গেছে রাতের ঘুম। কমলার শহর কাঞ্চনপুর যেন তার জৌলুস হারাচ্ছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে কবে নাগাদ কমলার শহর স্বমহিমায় ফিরবে তা বলা মুশকিল।

Post a Comment

0 Comments