IIW : বিকাশ ভট্টাচার্য, নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর:-লুটপাটের স্বর্ণযুগে ভুয়া অ্যাকাউন্ট দিয়ে আম জনতার টাকা লুট করেছিল সীতেশ নাথ নামে এক ফ্যাক্স ম্যানেজার। আসামের বাসিন্দাদের দিয়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে জনতাকে সর্বস্বান্ত করেছে সে। কিন্তু আজ অবধি দপ্তর থেকে কোন মামলা করা হলো না তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। দপ্তরের অডিট রিপোর্টে ১৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৮৯৬টাকা ৩২ পয়সা তার বকেয়া। দীর্ঘ চার বছর থেকে এই টাকা উদ্ধারের প্রয়াস চলেও এখনো অবধি দপ্তর কোন মামলা করেনি। সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো(সিবিআই) বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযুক্ত সিবিআই'র শিলং দপ্তরে দপ্তরে হাজিরা দিচ্ছেন বলে খবর। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে-১৩-৮-২০১৫ তারিখে। অকল্যান্ড শিলং সিবিআই অফিস থেকে কদমতলার ন্যাশনাল সমবায় সমিতির ম্যানেজার সীতেশ নাথের নামে প্রথম চিঠি আসে যার DPSHG নাম্বার 2762 ভুয়া অ্যাকাউন্ট এ অর্থ লুটপাটের বিষয়টি তখনই পরিষ্কার হয়। সিবিআই শুধু ম্যানেজার সীতেশ নাথ কে নয় সমবায় সমিতির বোর্ড অফ ডাইরেক্টর মনমোহন নমো ও অফিসে কর্মরত স্টাফদের ও জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। সিবিআই একটি SERZURE MEMO ও বের করে তাতে মামলা নম্বর সহ কোন ধারায় মামলা নথিভুক্ত হয়েছে তা উল্লেখ আছে এবং অ্যাকাউন্টগুলি কাদের নামের তারও বর্ণনা আছে। মামলা নম্বর- RC SHG 20144A 0008 যে ধারায় মামলা নথিভুক্ত হয়েছে- u/s 120B,420,468,471 IPC and Sec.13(2)r/w Sec.13(1)(d) of act, 1988 DATE OF SEIZURE 22-11-2015। সীতেশ নাথের বিরুদ্ধে তার মাসিক বেতন ৬ হাজার থেকে ১৬০০০ করার অভিযোগ উঠছে। তাছাড়া বোর্ডের সিদ্ধান্ত বহির্ভূত ৫ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা অফিসের আসবাবপত্র কেনা হয়েছে দেখিয়ে লুট করেছে সে। 29- 11- 2016 তারিখে সীতেশ নাথ কে বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে সিবিআই তদন্ত চলছে তবে দপ্তর এখন পর্যন্ত তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করতে পারেনি এবং সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হল এখন পর্যন্ত জনতার অর্থ লুটপাটের জন্য তার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। প্রসঙ্গত-কদমতলা, সরসপুর, বাঘন ও বড়গোল এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে এই সমবায় সমিতি। সীতেশ নাথ 1989 থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এই সমবায় সমিতির ম্যানেজার ছিলেন। ন্যাশনাল ফ্যাক্স এর বোর্ড অফ ডাইরেক্টর সহ বাকি রা নির্বাচিত। সিপিএম দলের তাবড় তাবড় নেতারা এই সমবায় সমিতির নির্বাচিত সদস্য। এত বড় দুর্নীতি হয়েছে কি তাদের অজান্তেই। অবশ্য বোর্ড অফ ডাইরেক্টর মন মোহন নমের বক্তব্য ম্যানেজার তাদেরকে না জানিয়ে এ ধরনের কান্ড সংগঠিত করেছেন। তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। অপরদিকে এই সমবায় সমিতির বর্তমান ম্যানেজার দুলাল দত্ত প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন উনাকে টাকা ফেরানোর জন্য বারবার নোটিশ দেওয়া হচ্ছে অথচ তিনি টাকা ফেরাচ্ছেন না। সিবিআই যে তাদেরও ডেকেছিল তিনি তা স্বীকার করেন এবং বর্তমানে ম্যানেজার সীতেশ নাথের কত টাকা বকেয়া তার তথ্য তুলে ধরেন। তবে এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে লুটপাটকারী ম্যানেজার সীতেশ নাথ জানান তিনি যা করেছেন নির্বাচিত বডি কে জানিয়েই করেছেন। তার এই বক্তব্যে এ ঘটনার উল্টো মোড় নিল। তাহলে এই লুটপাটে কি সমবায় সমিতির নির্বাচিত সদস্যরা জড়িত। না হলে তাদের চোখের সামনে এত বড় কেলেঙ্কারি' হলো কিভাবে। না ম্যানেজার সীতেশ নাথ নিজেকে বাঁচাতে বাকিদের দোহাই দিচ্ছেন। নিয়ম মোতাবেক বকেয়া টাকার ১৪ শতাংশ সুদ সহ ফেরানোর কথা। এ অর্থ জনগণের-কিন্তু তাজ্জব হওয়ার বিষয় চার বছর ধরে এ মামলাটি ঝুলছে কিন্তু আজ অবধি দপ্তর কোন মামলা করল না অথচ সিবিআই তথ্যসহ মামলা রুজু করেছে। তাহলে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। ম্যানেজার সীতেশ নাথ কে কি এখনো বাঁচানোর প্রয়াস চলছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে।
0 Comments