IIW : নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর :- মৃতার নাম সোমা দাস। বাড়ি ধর্মনগরের ডুপিরবন্দ লালছড়া এলাকায়। এটা কি সত্যি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা তা নিয়ে চলল দিনভর অনেক জল্পনা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানা চত্বর উত্তপ্ত হয়ে রইলো পুরো দিন। ধর্মনগর মহিলা থানার ওসি স্বর্ণা দেববর্মার বিরুদ্ধে উঠলো নানান অভিযোগ। মৃতার ভাসুর সমীরণ দাস সিপিআইএমের একজন বড় মাপের নেতা, তাই উনাকে এবং তার পরিবারকে বাঁচাতে মহিলা থানার ওসি প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, অবশেষে এলাকাবাসীর চাপে পড়ে পুলিশ বাধ্য হলো ভাসুর সমীরণ দাস, স্বামী নির্মল দাস ও সমীরণ দাসের ছেলে সুজিত দাস ও সুমন্ত দাস কে গ্রেফতার করতে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ডুপিরবন্দ লালছড়ার বাসিন্দা সোমা দাস নিজ বাড়িতেই বুধবার সকাল নয়টায় ফাঁসিতে ঝুলে পড়েন। তার পরিবারের লোকজন পুলিশে খবর না দিয়েই তড়িঘড়ি ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে সোমাকে নিয়ে চলে আসেন। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন। সোমার পরিবারের অভিযোগ, তাদের ফোন করে জানানো হয়েছে সোমার অবস্থা গুরুতর তাই জেলা হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে এসে সোমার বাড়ির লোকজন দেখেন সোমা মৃত। হাসপাতলে সুমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে তার মৃত্যু সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা কোন উত্তর দিতে পারেনি বলে সোমার পরিবারের অভিযোগ। পরবর্তী সময়ে সোমার স্বামী নির্মল দাস সহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে সোমা দাসের ভাই সঞ্জয় দাস ধর্মনগর থানায় একটি পরিকল্পিত হত্যার মামলা দায়ের করেন। সোমার পরিবারের অভিযোগ পুলিশ কোন এক অজানা কারণে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করছে না। পরবর্তী সময়ে শুক্রবার সকালে পুলিশ সোমা দাস মামলার অভিযুক্ত তার স্বামী, ভাসুর সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের থানায় এনে জামিনের মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেবার ব্যবস্থা করছিল, মৃতার পরিবার থানায় এই দৃশ্য দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ইতিমধ্যেই খবর প্রচার হয়ে যায় পুরো শহরে। এই ঘটনার খবর পেয়ে ধর্মনগর থানায় ছুটে আসেন মহিলা মোর্চা ও যুব মোর্চার সদস্য সদস্যরা। তারা পুলিশের ভূমিকায় তীব্র নিন্দা করেন এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জুড়ালো দাবি জানান। এরইমধ্যে থানা চত্বরে ছুটে আসা উত্তপ্ত জনগণ। এই ঘটনার মূল অভিযুক্তদের পুলিশের সম্মুখে আক্রমণ করার চেষ্টাও করেন তারা। ক্রমশ থানা চত্বরে বাড়তে থাকে উত্তেজনা। এই উত্তপ্ত পরিবেশ সামাল দিতে থানায় ছুটে আসতে হয় উত্তর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এবং অবশেষে মৃত সোমা দাসের স্বামী নির্মল দাস, সমীরণ দাস ও উনার দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হলে পরিবেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে পুলিশ এখনও এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। পুলিশের সম্মুখে এভাবে আক্রমণের ঘটনায় আবার ও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা কে প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত। জনগণের কাছ থেকে দাবি উঠছে অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির।
0 Comments