বিদ্যাভূষণ দাসের মতো নেতারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্বজনপোষণ এ ব্যস্ত হয়ে উঠছেন।


IIW: বিকাশ ভট্টাচার্য, নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর :- নিজের মাসতুতো ভাই কে পাম্প অপারেটর এর চাকরি পাইয়ে দিতে স্বদলীয় যুবক কে বঞ্চিত করলেন মন্ডল সভাপতি। দীর্ঘ ২৫ বছরের বাম শাসনের অবসান হওয়ার পর মানুষ ভেবেছিল এবার হয়তো দলবাজি স্বজনপোষণ হবে না, প্রকৃতরাই সুবিধা পাবে। কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্বেষী নেতাদের কারণে বদনাম হচ্ছে নতুন সরকার ও বিজেপি দলের ভাবমূর্তি। "সবকা সাথ সবকা বিকাশ" এর মূল মন্ত্র স্বার্থান্বেষীদের কাছে কিছুই না, তারা নিজ মন্ত্রে দীক্ষিত। নিজে এবং তাদের আত্মীয় পরিজনদের সরকারি সুবিধা পাইয়ে দিতে পিছপা হচ্ছে না, অথচ স্বদলীয়রাই বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। এটাই কি পরিবর্তন ??? প্রশ্ন উঠছে। গরিব পরিবারের এক যুবককে পাম্প অপারেটর এর চাকুরী থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজের মাসতুতো ভাই কে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য ত্রিস্তর পঞ্চায়েত আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন কদমতলা কুর্তি বিজেপির মন্ডল সভাপতি  বিদ্যাভূষণ দাস। প্রসঙ্গত ব্রজেন্দ্র নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা রতন মনি দাস পিতা রমেন্দ্র কুমার দাস দীর্ঘ দেড় বছর থেকে পাম্প অপারেটর এর চাকুরী করে আসছেন। এর আগে এই যুবকের পিতা রসেন্দ্র কুমার দাস অপারেটরের চাকরি তে ছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর পঞ্চায়েত থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রতন মনিকে পাম্প অপারেটর এর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ০৪/০২/২০১৭ তারিখে পঞ্চায়েত রতন মনি দাস এর নামে রিজুলেশন করে। সেই মোতাবেক পাম্প অপারেটর এর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে আসছিল এই যুবকটি। বিগত দেড় বছরের বকেয়া পাওনা বাকি। তার মধ্যে ১৩/০৯/২০১৮ তারিখে পঞ্চায়েত থেকে আরেকটি রিজুলেশন পাস করা হয়, তাতে রণধীর দাস পিতা কৃপাময় দাস কে পাম্প অপারেটর হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধান অর্চনা মাদ্রাজি সহ ৯ জন পঞ্চায়েত সদস্য সদস্যা কিছুই জানেন না বলে একটি প্রতিলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগ মন্ডল সভাপতি বিদ্যাভূষণ দাস উনার মাসতুতো ভাই রণধীর দাস কে পাম্প অপারেটর এর চাকরি পাইয়ে দিতে পঞ্চায়েত সচিব চন্দন দাস এর উপর চাপ প্রয়োগ করেন। এই পঞ্চায়েতের সিপিএমের উপপ্রধানকে সাথে নিয়ে মন্ডল সভাপতি পঞ্চায়েত সচিব কে দিয়ে রিজুলেশন করিয়ে নেন। পঞ্চায়েতের খাতায় রিজুলেশনের কপিতে পঞ্চায়েত  সচিবের তারিখসহ স্বাক্ষর থাকলেও প্রধান অর্চনা মাদ্রাজীর সিল ও স্বাক্ষর আছে কিন্তু তারিখ নেই। কিন্তু প্রশ্ন যে পঞ্চায়েত প্রধান আগে একটি কাগজে স্বাক্ষর করলেন যে তিনি কিছু জানেন না প্রধান সাহেবার সিল সই কৃত কাগজটি বঞ্চিত রতন মনির কাছে রয়েছে। তাহলে রিজুলেশনে উনার স্বাক্ষর এলো কিভাবে? এ বিষয়ে প্রধান অর্চনা মাদ্রাজি কে প্রশ্ন করলে তিনি আমতা আমতা করেন, পরিষ্কার উত্তর দিতে পারেননি। তবে এটা পরিষ্কার করেছেন যে পাম্প অপারেটর এর বিষয় এ বিদ্যাভূষণ দাস উনার উপর রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করেছেন। এই ঘটনায় সবচেয়ে বড় সমস্যায় পঞ্চায়েত সচিব চন্দন দাস। যাকে ভয় ভীতি হুমকি দিয়ে জোর জবরদস্তি রিজুলেশন পাস করে মণ্ডল সভাপতির ভাইকে চাকুরী দেওয়ার প্রয়াস হয়েছে। নেতার চাপে বিপাকে পড়ে গেছেন পঞ্চায়েত সচিব। বলতে গেলে ক্ষমতার জোরে অবৈধ কাজ করেছেন বিদ্যাভূষণ দাস।  সচিব চন্দন দাস স্বীকার করেছেন যে বিদ্যা ভুষণ দাস তার উপর পাম্প অপারেটর এর চাকুরী নিয়ে চাপ প্রয়োগ করেছেন। অপরদিকে পঞ্চায়েতের বাকি সদস্যরাও জানিয়েছেন, তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। প্রকৃত পাপক হচ্ছে রতন মনি দাস। গরিব ঘরের ছেলে তার পিতা নেই সে পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু স্বদলীয় যুবককে বঞ্চিত করে নিজের মাসতুতো ভাই, যে  পরিবার সিপিআইএম দলের সাথে যুক্ত, সেই পরিবারে চাকরি দেওয়াতে বিজেপি দলের অভ্যন্তরে চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে।   ব্রজেন্দ্রনগর এলাকার
 বিজেপি নেতৃত্ব রা মণ্ডল সভাপতির এহেনো কান্ড  বরদাস্ত না করতে পেরে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন। যার ফলশ্রুতিতে কদমতলা ব্লকের বিডিও আপৎকালীন অবস্থায় পাম্প অপারেটর এর চাকরির প্রস্তাবটি বাতিল করে দেন। জানা গেছে এই চাকুরী নিয়ে কদমতলা ব্লকের ভিডিও বি দাসের উপর মন্ডল সভাপতি চাপ প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু নিজ দলীয় লোকেরা প্রতিবাদ করায় আপাতত পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন মন্ডল সভাপতি। ব্রজেন্দ্র নগর গ্রামে পাম্প অপারেটর চাকরি নিয়ে সবার মুখে জোর চর্চা চলছে। বিদ্যাভূষণ দাস নাকি মাসির বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করেছেন সেই বাড়ির উপর উনার অনেক দায়িত্ব আছে বর্তমানে তিনি মন্ডল সভাপতি উনার দল ক্ষমতায় তাই এই পরিবারে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে নিজের কর্তব্য পালন করতে চান তিনি। কিন্তু এলাকাবাসীর বক্তব্য নিজ ভাই কে চাকরি পাইয়ে দিতে স্বদলীয় যুবকের পেটে কেন লাথি মারার চেষ্টা করলেন মন্ডল সভাপতি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত আইন কে উলঙ্গ করে নিজের নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে চাইলেন। তা থেকে বলা যায় লঙ্কায় যেই যায় সেই রাবণ। বাম আমলে নেতারা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন, তার চিত্র গোটা রাজ্যে ধরা পড়ে। এবার কি রাম আমলেও সেই ট্রেডিশন বজায় থাকবে। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার ডাক দিয়েছেন, নিয়োগ নীতিতে স্বচ্ছতা এনেছেন আর সরকার ও দলকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিদ্যাভূষণ দাসের মতো নেতারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্বজনপোষণ এ ব্যস্ত হয়ে উঠছেন। এটা কিন্তু ভালো লক্ষণ বলে মনে করছেন না  সাধারন জনগন।

Post a Comment

0 Comments