IIW: আবির রায়, নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা :- আবারো অকালে ঝরে গেল একটি প্রাণ। মাধবী, মাধবী ত্রিপুরা। ধর্ষণ, খুন, তারপর মাটিচাপা দিয়ে দেওয়া হয় মাধবীর দেহ। দক্ষিণ জেলার নতুন বাজার এলাকায় বাস করত মাধবী। কৃষ্ণকান্ত পাড়া সিনিয়র বেসিক স্কুলের অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করতো সে। স্কুল পড়ুয়া এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুন করে মৃতদেহ মাটিচাপা দিয়ে দেওয়া হল, এ কোন রাজ্যে বাসকরছি আমরা? একদিকে নোংরা রাজনীতি, ষড়যন্ত্র অন্যদিকে নিরাপত্তাহীন জীবন যাপন আর মানসিক অধঃপতন। বিকৃত মানসিকতা আমাদের সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে রোজ। শিশু, কিশোরী, যুবতী এমনকি বৃদ্ধা পর্যন্ত এই বৃক্রিত মানসিকতার লোকেদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। ঘটনার বিবরণে আমাদের প্রতিনিধি জানান, কর্বুক মহকুমার নতুন বাজার থানার অধীনে পূর্ব মানিক্য দেওয়ান গ্রামের নতুন কলোনির জঙ্গল থেকে মাধবীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে ওই কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয় তারপর তাকে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে দেওয়া হয়। কৃষ্ণকান্ত পাড়া সিনিয়র বেসিক স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী মাধবি ত্রিপুরা। অন্যান্য দিনের মতো বুধবার সকালে মাধবী স্কুলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। ওই দিন ছিল তার স্কুলে পরীক্ষা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল, ধীরে ধীরে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও মাধবী বাড়ি আসছে না দেখে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান মাধবীর পিতা মনোরঞ্জন ত্রিপুরা। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ-খবর শুরু করেন তিনি। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ও খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন মাধবী সেখানেও যায়নি। তার পরই তারা এলাকায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে দেন। রাত পোহালে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এদিক-ওদিক ছুটতে থাকেন পরিবারের লোকজন। বিভিন্ন লোকের সাথে কথা বলে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন মাধবীকে এলাকারই দুই যুবক কষ্টরাই ত্রিপুরা (৩০) এবং বনজয় ত্রিপুরার (১৯) সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। সাথে সাথেই এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই দুই যুবককে আটক করে মাধবী সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। ওই দুই যুবকের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পেয়ে ধারণা করা হয় যে, মাধবীর নিখোঁজ হওয়ার পেছনে তাদের হাত রয়েছে। ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় লোকজন কষ্টরাই ও বনজয় কে মারধর শুরু করে। গণধোলাই খেয়ে তারা সত্য ঘটনা সবার সামনে খুলে বলে। কিভাবে মাধবীকে অপহরণ করা হয়েছে, এবং তাকে ধর্ষণের পর খুন করে কোথায় মৃতদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে সবই বলেছে তারা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় নতুনবাজার থানায়। খবর পেয়ে বিশাল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বনজয় ত্রিপুরাকে ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে বাঁচিয়ে নিজেদের কাস্টডিতে নেন। পুলিশ আসার সুযোগে সেখান থেকে কষ্টজয় ত্রিপুরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান গোমতী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নবদ্বীপ জমাতিয়া, অমরপুরের এসডিপিও সৌভিক দে, নতুনবাজার থানার ওসি, করবুক মহাকুমার মহকুমা শাসক সহ পদস্থ আধিকারিকরা। মৃতদেহ মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
0 Comments