

IIW : নিজস্ব প্রতিনিধি, চুরাইবাড়ী :- পরকীয়া প্রেমে বিফল হয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মঘাতি গৃহবধূ। অপরদিকে তার ভাইয়ের দাবি সম্পদ হাতিয়ে নিতে বোনকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছেন শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে উত্তপ্ত গোবিন্দপুর এলাকায়।সুবিচারের দাবিতে থানায় মামলা। প্রেমে জাত কূল মান বয়স মানে না,কথাটি সত্যি হলেও সেই প্রেমটি পরকীয়া হলে এতে এক সময়ে গরল বেরিয়ে আসে।এমন ভুরি ভুরি প্রমাণও রয়েছে।যার জ্যান্ত নিদর্শন স্বরুপ এক করুণ পরকীয়া প্রেমের নিদারুণ কান্ড ঘটে গেল উত্তরের চুরাইবাড়ী থানা এলাকার গোবিন্দপুরে।অবৈধ ত্রিকোন প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মঘাতি হলেন এক গৃহবধূ।বিষয়টি যদিও শেষ পর্য্যন্ত থানা পর্য্যন্ত গড়িয়ে আদালতের কাঠগড়ায় পৌছার পথে তবুও এ সংবাদ সংগ্রহ করা পর্য্যন্ত এ কান্ডে অভিযুক্তদের আইনি জালে গ্রেফতারের কোনও খবর নেই। এমন চাঞ্চল্যকর কান্ডে গোটা এলাকার জনমনে নানা প্রশ্ন সহ একরাশ ক্ষোভ বিরাজ করছে।তবে উক্ত রহস্যাবৃত কান্ডটিকে পরিকল্পিত খুন বলে অভিযোগ তুলেছেন মৃতার ভাই। জানা গেছে আত্মঘাতি মহিলার নাম পাপিয়ারানী নাথ(৩০)স্বামী লক্ষীকান্ত নাথ।বাড়ি চুরাইবাড়ি থানাধীন গোবিন্দপুর গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডে।উক্ত গৃহবধূর পিতার নাম মৃত নিবাস নাথ।বাড়ী কদমতলা থানাধীন বড়গোল গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬ নং ওয়ার্ডে।গত ১৩ বছর আগে প্রয়াত পরেশচন্দ্র নাথের ছেলের সাথে সামাজিক ভাবে বিয়ে করে ঘর বাঁধেন পাপিয়া।তাদের বর্তমানে দেবা নাথ নামের ১১ বছরের একমাত্র একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।প্রথম প্রথম তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হলেও দেবার জন্মের পর থেকে পাপিয়ার স্বামী আর্থিক ও শারিরিক ভাবে দুর্বল হয়ে কাপড়ের ব্যবসায় নেমে পড়েন।তখন থেকে সুন্দরি গৃহবধূ পাপিয়া নিজের স্বামীকে মনে মনে অপছন্দের তালিকায় রেখে পরকীয়া সহ ত্রিকোন প্রেমে মেতে উঠেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।বিষয়টি পাপিয়ার স্বামীর নজরে ধরা পড়লেও তিনি পরিস্থিতির শিকার হয়ে সব কিছু নীরবে মেনেই চলছিলেন।এমনটা জানিয়েছেন গ্রামের জনগন।পাপিয়া প্রথমে এক স্কুলে প্রাইভেট শিক্ষিকার কাজ করলেও গত ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে তিনি ত্রিপুরা বনদপ্তরের জাইকা প্রকল্পের কন্ট্রাক্ট বেসিস্ ধর্মনগর রেঞ্জ অফিসে ডকুমেন্ট এসিস্টেন্ট কর্মি হিসেবে কাজে নিযুক্ত হন।কিন্তু বেসরকারি চাকুরি লাভের একমাস অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই গত ২৪ জানুয়ারি রাত ১১:৩০ মিনিট নাগাদ পরিবারের লোকদের নজর এড়িয়ে নিজ ঘরের পেছনের বারান্দায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে শরিরে আগুন লাগিয়ে আহত হন।আগুনে তার শরিরের প্রায় ষাট শতাংশ পুড়ে যাবার পর তাকে প্রথমে ধর্মনগর ও পরে আগরতলার জিবি হাসপাতালে নিয়ে যাবার পথে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।এ ঘটনার নেপথ্য কারন নিয়ে কেহ তেমন কিছু না বললেও মৃত গৃহবধূর কিশোর ছেলের বয়ান প্রকাশ্য বেরিয়ে আসতেই ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে আসে।তবে বিষয়টিকে অন্যচোখে দেখে সম্পদের জেরে গৃহবধূ আত্মঘাতি হন বলে পুলিশে এক লিখিত এজাহার দাখিল করেন মৃতার ভাই শান্তনু নাথ।চুরাইবাড়ি থানার পুলিশ মামলাটি(সিআরবি /পিএস/01/2020)ভারতীয় দণ্ডবিধির(498/306/34)ধারায় রুজু করে তদন্তে নামলেও নিটফল শূণ্য।প্রদত্ত মামলায় মৃতার ভাই উল্লেখ করেন যে শাশুড়ি সুমতী নাথ(৫৮)এবং দেবর সুবীর নাথ(৪০)মিলে তার বোনকে চিরতরে হটিয়ে দিয়েছেন।বর্তমানে চুরাাইবাড়ি থানার এসআই হারাধন বোস মামলাটির তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে এ কান্ডে মৃত গৃহবধূর নাবালক পুত্র, স্বামী, শাশুড়ী ও দেবরের বক্তব্য পুরো উল্টো।তারা প্রমাণ দর্শিয়ে বলেন যে পাপিয়ারানীর চরিত্র ভালো ছিল না।তিনি অনেক ছেলে বন্ধুর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে ছিলেন।রাত জেগে ফোনে তাদের সাথে কথাবার্তা চলত।বিশেষ করে ধর্মনগর এলাকার চারুবাসার বাসিন্দা সুদীপ দেবনাথের সাথে তার সম্পর্ক ছিল নিবিড়।ওদের দুজনের বেশকটি প্রেম জনিত ছবিও পাওয়া গেছে পাপিয়ার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে।মৃত গৃহবধূর কিশোর পুত্রের বয়ানও চমকে দেবার মত।সে জানায় সুদীপ দাদার সাথে তার মা মাঝে মধ্যে সময়ে অসময়ে দেখা করতেন।এমনকি একটি ল্যাপটপ মোবালইল সেটও সুদীপ পাপিয়াকে কিনে দিয়েছিল।তাদের অবৈধ প্রেমে ফাটলের ফলে পাপিয়া আত্মঘাতি হন বলে শ্বশুরবাড়ির লোকদের অভিযোগ।এবার তারা সম্পূর্ণ কান্ডটি যাচাই করে মূল অভিযুক্তদের উপযুক্ত শান্তির দাবীতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে নিয়ে ন্যায় বিচার কামনা করেছেন। এখন দেখার বিষয় চুরাইবাড়ি থানার পুলিশ ঘটনাটি কতটুকু সুষ্ঠু তদন্ত করে।
0 Comments