IIW : নিজস্ব প্রতিনিধি, চুরাইবাড়ি :- পুত্রের হাতে পিতা খুনের কান্ডে উত্তপ্ত ত্রিপুরা-আসাম সীমান্ত এলাকা। পরিবার সূত্রের দাবি সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার কারণেই নাকি এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে আসাম-ত্রিপুরা সীমান্তের বাগন গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঠালতলী এলাকায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আবু তাহের(৪১) সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার কারণে তার বাবা জহুর উদ্দিনকে(৬৮) মানসিক ও শারীরিক হেনস্থা করে আসছে। পেশায় আবু তাহের আসামের গৌহাটি উচ্চ আদালতের আইনজীবী। সে বহুদিন ধরে পিতার সম্পত্তি একার হাতে ভাগিয়ে নেওয়ার কারণে তার বাবাকে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা দিতে থাকে। অবশেষে গতকাল সন্ধ্যা রাতে সে নিজ হাতে তার বাবা জহুর উদ্দিনকে শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলে বলে পরিবারের লোকজন জানায়। পেশায় মৃত জহুর উদ্দিন ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি শিক্ষক। নিজের হাতে পিতাকে হত্যা করে নিজেই আবার তার সকল আত্মীয়-স্বজনকে খবর দেয়। ত্রিপুরা রাজ্যের ধর্মনগরে থাকা তার বোন ও বোনজামাই ছুটে যায় তার বাড়িতে। গতকাল রাতে মৃতদেহটি সে নিজের ঘরেই গোপন করে রাখে। অবশেষে আজ দুপুর নাগাদ ঘটনা চাউর হতেই নড়েচড়ে বসেন পরিবারের লোকজন। খবর দেওয়া হয় বাজারীছড়া থানায়। ছুটে যান বিশাল পুলিশবাহিনী এবং মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অপরদিকে আবু তাহেরকে প্রথমে বাজারীছড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে জেলা আদালত করিমগঞ্জে তুলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বাজারীছড়া থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২/৫০৬ ধারায় ও ৩৫/২০ নম্বরে একটি মামলা নেওয়া হয়েছে। শুরু হয়েছে পুলিশের জোর তদন্ত। অবশ্য ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত পুলিশ পরিষ্কার কিছু বলতে পারছে না। তবে তাদের প্রাথমিক ধারণা জহুর উদ্দিনকে খুন করা হয়েছে। এদিকে মৃতার একমাত্র কন্যা আবু তাহেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে। তিনি জানিয়েছেন সম্পত্তি পাওয়ার লোভে শ্বাসরুদ্ধ করে তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। তাই তিনি সুষ্ঠু তদন্ত করে কঠোর শাস্তির দাবিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সাংবাদিকদের সামনে। পিতৃহারার জ্বালা বুকে নিয়ে ধর্মনগর থেকে ছুটে যান তিনি। পেশায় একজন আইনজীবী হয়ে কি করে নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছে ওই পাষণ্ড পুত্র আবু তাহের। এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা কাঠালতলী এলাকায়।
0 Comments