IIW : দেবাশীষ দত্ত, নিজস্ব প্রতিনিধি, কৈলাসহর :- গত রোববার গভীর রাতে ইরানি থানার অন্তর্গত পূর্ব ইয়াজিখাওরা গ্রামের বাসিন্দা সৌভিক আলীর বাড়ি থেকে ইরানি থানার পুলিশ সন্দেহজনক চার জন মহিলাকে গ্রেফতার করে। সারারাত ইরানি থানায় এই চার জন মহিলাকে বসিয়ে রেখে সকাল বেলা তাদের কৈলাসহর মহিলা থানায় আনে। এই খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং ঊনকোটি জেলায় চাউর হয় এই বলে যে, চার জন রোহিঙ্গাকে ইরানি থানায় আটক করা হয়েছে। খবর পেয়ে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা সকাল নয়টা থেকে কৈলাসহর মহিলা থানায় যোগাযোগ করা শুরু করেন কিন্তু মহিলা থানার স্টাফ এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারবেন না বলে জানান। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভালোভাবে কথা পর্যন্ত উনারা বলতে চাননি। ধৃত চার জন মহিলাকে মহিলা থানার একদম ভেতরের ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়। এরপর সংবাদ প্রতিনিধিরা মহিলা থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান এসডিপিও সাহেবের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। দুপুর বারোটায় এসডিপিও সাহেব মহিলা থানায় এলে উনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তখন উনি জানান প্রথমে ধৃতদের জেরা করা হবে তারপরে আপনাদের সব জানিয়ে দেওয়া হবে বা ছবি তোলার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু এসডিপিও চন্দন সাহা দুপুর দেড়টার সময় যখন থানা থেকে চলে যাচ্ছিলেন তখন উনাকে আবার জিজ্ঞাসা করা হলে উনি উত্তর দেন এ ব্যাপারে উনি কিছুই জানেন না। ধৃত চার জন মহিলাকে আবার ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে পুলিশ এই বিষয়টাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন না। এমন কি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করছেন। পুলিশের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় সবাই ছি্ ছি্ করছে। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, ধৃত চার জন মহিলার নাম হাসনা বেগম বয়স (৩২), সমিরা বেগম বয়স (১৬), মনোয়ারা বেগম বয়স (১৬), এবং আনোয়ারা বেগম বয়স (১২)। ধৃত হাসনা বেগমের বাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। গত ১১ বছর পূর্বে আসামের শিলচরে তার বিয়ে হয়। শিলচরে স্বামীর সঙ্গেই উনি থাকেন। বাকি তিন জন মহিলার বাড়ি বাংলাদেশ, ওরা সম্পর্কে হাসনা বেগমের ভাগ্নি। গত একমাস পূর্বে ওরা ঘুরতে আসে হাসনার স্বামীর বাড়িতে শিলচরে। যদিও ওদের কাছে  কোন বৈধ পাসপোর্ট নেই। এই তিনজনকে নিয়ে হাসনা গতকাল সন্ধ্যায় আসে ইয়াজিখাওরা গ্রামের বাসিন্দা সৌভিক আলীর বাড়িতে। এই সৌভিক আলী হাসনা বেগমের সম্পর্কে কাকা হয়। তবে পুলিশের অপর একটি সূত্রে জানা যায় যে, চারজন মহিলাই নাকি রোহিঙ্গা। এরা ভালোভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে না। তারা তাদের দেশ থেকে বছর খানেক আগে পালিয়ে এসে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে বসবাস করত। এক বছরে ওরা কিছুটা বাংলা শিখে নেয়, তাও চট্টগ্রাম অঞ্চলের। তবে ধৃত এই চারজন মহিলার বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ তৈরি হয়েছে।