IIW : চুড়াইবাড়ি :- নাইট সুপার যোগে ত্রিপুরা থেকে অসমে প্রবেশের মুখে চুড়াইবাড়ি পুলিশ চেক পোষ্টে ধরা পড়ল আট শিশু সহ ত্রিশ সন্দেহ ভাজন রোহিঙ্গা। সোমবার সন্ধারাতে আগরতলা থেকে গুয়াহাটিগামি AS25CC/8685 নম্বরের রেহান নৈশ বাসে অসমের চুড়াইবাড়ি ওয়াচ পোষ্টের পুলিশের রুটিন তল্লাশির সময় কর্তব্যরত ইনচার্জ সুপ্রীয় ভট্রাচার্য্যের সন্দেহ হলে তিনি গাড়ি থেকে ত্রিশ যাত্রীকে নামিয়ে জেরা করতে শুরু করলে ঝুলা থেকে বিড়াল বেরিয়ে আসে।যাত্রীরা পুলিশের প্রথম প্রশ্নের জবাবে নিজেরা মায়ান্মারের রোহিঙ্গা বলে পরিচয় দেয়। পরে ধৃতদের জিঙ্গাসাবাদ চালাতে অকুস্থলে পৌছান বাজারিছড়া থানার ওসি গৌতম দাস সহ এসআই শংকর চক্রবর্ত্তী ও মানবজ্যোতি মালাকার।পুলিশি জিঙ্গাসাবাদে আটক লোকেরা জানায় যে তারা বিগত দিনে মায়ান্মারের ডমবাই বলিবাজার হৃদরকোল গ্রামে কৃষিকাজ করে বসবাস করত। তাদের পূর্বপুরুষেরা ব্রিটিশ আমলে বাংলাদেশ থেকে বার্মাতে গিয়ে বসতি গড়ে ছিলেন। পরে সেখানে গন্ডগোল লেগে পড়ায় তারা বার্মা হয়ে বাংলাদেশে চলে যায়।সেখানে কয় বছর থাকার পর তারা পেশার তাগিদে কলকাতা হাওড়া হয়ে ভারতে প্রবেশ করে জম্মু নেরোয়েল কলোনিতে বসবাস করে। প্রায় ৫/৬ জম্মুতে বসবাস করার পর গত কয়মাস ধরে জম্মুতে বেশী করে ঠান্ডা পড়ায় তারা পেটের তাগিদে পরিবার সঙ্গে নিয়ে ৪/৫ দিন আগে ট্রেনযোগে ত্রিপুরার আগরতলা পৌছায়। সেখানে তারা বাধারঘাট এলাকার একটি হোটেলে কয়দিন থাকার পর কোনও কাজের সন্ধান না পেয়ে কলকাতার জনৈক রাজু নামের দালালের সহযোগিতায় সোমবার সকালে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে পাড়ি দিতে সুপার বাসে চড়ে বলে জানায়। বর্তমানে তাদেরকে প্রাথমিক তল্লাশি ও জিঙ্গাসাবাদের পর অসমের চুড়াইবাড়ি ওয়াচ পোষ্টের পুলিশ এ রাতেই তাদেরকে করিমগঞ্জ ডিএসপি ব্রাঞ্চে হস্তান্তর করেছে।এ মর্মে নিজ প্রতিক্রিয়ায় চুড়াইবাড়ি ওয়াচ পোষ্টের ওসি সুপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, ধৃতদের মধ্যে ছোট বড় পুরুষ মহিলা মিলে মোট ত্রিশজন মানুষ থাকলেও মুলত ওরা সাতটি পৃথক পৃথক পরিবারের মানুষ। এদের মধ্যে নূর মোহাম্মদের পরিবারে রয়েছেন চারজন লোক। মহাম্মদ তৈয়ুবের পরিবারে রয়েছে ছয় জন। আব্দুল গনির পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার। মোহাম্মদ আয়ূবের পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার। অনুরুপ ভাবে রবি আলমের পরিবারের সদস্য সংখ্যাও চার।তাদের সাদিক আহমেদের পরিবারে রয়েছে দুই জন লোক।জালাল আলমের পরিবারের সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ছয়। পুরো গ্রুফে রয়েছে বারোজন জন শিশু,পুরুষ নয় জন ও নয় জন মহিলা। জেলা প্রশাসনই পুরো বিষয়টুকু খতিয়ে দেখে চুড়ান্ত ব্যবস্থা নেবে বলে জানান ওসি। এদিকে চুড়াইবাড়ি গেইটে সন্দেহ ভাজন রোহিঙ্গাদের আটকের ঘটনার পর স্থানিয় সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে।ওদের সঙ্গে কোনও অবৈধ সামগ্রী পুলিশ জব্দ না করলেও ওদের সঙ্গে থাকা প্রমানপত্র নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে পুলিশ। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন অসমের করিমগঞ্জ জেলার চুড়াইবাড়ি ওয়াচ পোষ্টের ওসি সুপ্রিয় ভট্টাচার্য।উল্লেখযোগ্য যে আগরতলা থেকে নাইট সুপার দিয়ে ত্রিপুরা পেরিয়ে অসম প্রবেশের সাথে সাথে অসম পুলিশ ৩০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করতে সক্ষম হলেও রাজ্যের রাষ্ট্রপতি কালার্স প্রাপ্ত মডেল পুলিশ রা রোহিঙ্গার টিকির লাগান পাননি। আগরতলা থেকে চুড়াইবাড়ি পর্যন্ত মোট ৫০ টিরও অধিক পুলিশ থানা রয়েছে কিন্তু কি অদৃশ্য কারণে একটি থানার পুলিশ ওই নাইট সুপারে তল্লাশি চালায় নি সেটা নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে রাজ্যের প্রবেশ ও শেষ প্রান্ত চুড়াইবাড়ি নাকের ডগায় ১৩ নম্বর ব্যাটেলিয়ান টিএসআর এর তল্লাশি নাকা পয়েন্ট রয়েছে। কিন্তু সেই নাকা পয়েন্টে টিএসআর বাবুরা যে কেমন তল্লাশি করছেন তা আবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলো রাজ্য প্রশাসনের। এমনকি সীমান্ত এলাকা চুড়াইবাড়ি জনগণের অভিযোগ চুড়াইবাড়ি থানাতে আসা নব্য অফিসার বিষ্ণু পদ ঘোষ নিজেই সবকিছু দেখাশোনা করছেন। এক কথায় ঘোষ বাবু চুড়াইবাড়ি থানার মধ্যমনি আর উনার কারণেই চুড়াইবাড়ি এলাকায় নানা অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয় কয়েক বছর পূর্বেও উনি চুড়াইবাড়িতে ছিলেন সেই সুবাদে পুনরায় চুড়াইবাড়িতে ট্রান্সফার হয়ে এসে উনি থানার মধ্যে ওসি স্বরূপ আচরণ করছেন বলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ। এখন দেখার বিষয় উত্তর জেলার পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ আধিকারিকগন চুড়াইবাড়ি থানার দিকে কতটুকু নজর দেন নাকি থানার মধ্যমনি ঘোষ বাবু বহাল তবিয়তে গোটা চুড়াইবাড়ি এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপে প্রশ্রয় দিয়ে যান তা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন চুড়াইবাড়ি বাসির মধ্যে।
0 Comments